কিছু জমানো টাকার গল্প (অনুপ্রেরণা-১)
লিখেছেন লিখেছেন শুভ্র পারাবত ২২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:১৭:৩৬ রাত
বেশ কিছুদিন ধরে সে(স্ত্রী) আমার কাছ থেকে প্রতিদিন দশ টাকা করে নিয়ে একটি প্লাষ্টিক ব্যাংকে টাকা জমানোর পরিকল্পনা করেছিল৷ শুনে আমিও রাজি৷ তো শুরু হলো৷ আমি দেওয়া শুরু করলাম৷ কিন্তু ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারি নি৷ কখনো দশদিন পর দিয়েছি,কখনো দুইদিন পর৷ তবে ঐ দশ টাকা করে বিশ অথবা একশ দিতে হয়েছে৷ ও বায়না করে নিয়ে নিত৷ কড়ায়-গণ্ডায় উসল করে নিত ও৷ আমার ভালো লাগে ওর মহাজনী দেন-দরবার৷ এতে ভিন্নরকম জান্নাতী স্বাদ যেন আমি অনুভব করি৷ ভাবিনি যে এই জান্নাতী স্বাদটা অন্য আরেকটা জান্নাতী স্বাদে প্রতিস্থাপিত হবে আজ৷ বেশ কিছুদিন থেকে সে এফবিতে দেখছে ড. বিলাল ফিলিপসের "ভালোবাসার চাদর" বইটি আসছে৷ আমি যেহেতু বই কিনি সেহেতু আমি বলতাম,এটাও আমি কিনবো ইনশা আল্লাহ৷ তারপর কেটে গেল কয়েকদিন৷ আজ আমি একটি অনলাইন শপে ম্যাসেজ দিয়ে জিজ্ঞেস করেছি যে,বইটি এসেছে কিনা? সে সম্ভবত তা দেখিছিল৷ আমি অনলাইন শপকে বলে দিলাম যে,আমার জন্য এককপি রাখবেন৷ যেহেতু আজ-কালকের মধ্যে বইটি চলে আসবে তাই অর্ডারটা দিয়েই দিলাম৷ তারপর ফোনে কলিগের সাথে আলাপে ছিলাম ড্রয়িং রুমে৷ তারপর রুমে এসে দেখি ও আমার হাতে কিছু ভাংতি টাকা দিয়ে বলছে,
'এই নাও দুইশো ত্রিশ টাকা৷'
বললাম,মানে কি?
বললো, 'ভালোবাসার চাদর' বইটি কেনার জন্য এই টাকাটি দিলাম৷'
-'বুঝতে পারলাম না কোথায় থেকে এসব?'
বললো, 'ঐ যে ব্যাংকটা ভেঙ্গে দিয়েছি৷
আমি বিস্ময়ে বিস্মিত হয়েছি৷
আসলে, অনেকদিন অবাক হয় নি,হই নি খুব আবেগিত৷ ওল্লাহি আজ হলাম৷ একবিন্দু অশ্রুর ফোঁটা চশমার গ্লাসকে সত্যিই ঝাপসা করে দিয়েছিল৷ ভাবছিলাম, দ্বীনের আলোয় আলোকিত করার ক্ষুদ্র চেষ্টা আল্লাহ ক্ষাণিকটা হলে সফল করেছেন৷
আলহামদুলিল্লাহ,জীবনে অনেক বই কিনেছি ক্ষাণিকটা গিফটও পেয়েছি কিন্তু আজকের এই উপহারটুকু অনবদ্য এক স্মৃতি তৈরি করলো৷ সেই স্মৃতি অন্তরের,সেই স্মৃতি অনন্তের হয়েও থাকবে ইনশাআল্লাহ৷
বিষয়: বিবিধ
৭৩১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর অনুভুতি। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন